Play Online Casino

Jul 5, 2015

VOIP Call







ভিওআইপি কল সম্পর্কে জাতীয় একটি দৈনিকে প্রকাশিত একটি নিউজ আমি আপনাদের কাছে পেশ করছি যাতে এটি সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন আগ্রহী ব্যক্তিবর্গ। 

“নিয়ম লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রমালিকানাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটক দেশে অবৈধ ভিওআইপি কল আনছে। অভিযোগে গত এক মাসে পাঁচবার অভিযান চালিয়ে প্রায় লাখ ২০ হাজার টেলিটক সিম বন্ধ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান (বিটিআরসি) অবশ্য এরপরও সতর্ক হয়নি টেলিটক।
সূত্র জানায়, ভিওআইপি ঠেকাতে দেশের তিন বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক রবি সম্মিলিতভাবে অভিযোগ জানিয়ে চার দফা বিটিআরসি এবং ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। মূলত এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বিটিআরসি টেলিটককে কারণ দর্শানোর জন্য দুই দফা চিঠি দেয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো চিঠিরই জবাব দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

বিদেশ থেকে আন্তর্জাতিক কল আনার অবৈধ পথ হলো ভিওআইপি। বৈধ পথে বিদেশ থেকে একটি কল প্রথমে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটর আইজিডব্লিউ অপারেটর সুইচের (আইওএস) মাধ্যমে আইসিএক্স অপারেটরের কাছে যায়। আর আইসিএক্স অপারেটরের মাধ্যমে তা মোবাইল অপারেটর হয়ে গ্রাহকের কাছে যায়। এর মাধ্যমেই দেশের গ্রাহকেরা বিদেশ থেকে আসা কলে কথা বলতে পারেন।
পুরো ব্যবস্থায় বৈধ পথে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে একটি কল আনার খরচ পড়ে দেড় সেন্ট বা এক টাকা ২০ পয়সা। এই টাকার ৪০ শতাংশ সরকার, ১৭ দশমিক শতাংশ আইসিএক্স, ২২ দশমিক শতাংশ মোবাইল অপারেটর আর বাকি ২০ শতাংশ আইজিডব্লিউ কোম্পানিগুলো পেয়ে থাকে।
ভিওআইপি পদ্ধতিতে আসা বিদেশি কলকে স্থানীয় মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে লোকাল কল হিসেবে দেখানো হয়। এই পদ্ধতিতে দেশে কোনো কল এলে পয়সা ভাগাভাগির স্বাভাবিক নিয়মটি আর প্রযোজ্য হয় না। এর ফলে সরকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ রাজস্ব হারায়, আর লাভবান হয় শুধু যে পক্ষ কলটি আনে। বিটিআরসির হিসাবে, বিদেশ থেকে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ১১ কোটি মিনিট কল আসে।
গ্রামীণফোন, বাংলালিংক রবি সর্বশেষ গত ১৭ জুন বিটিআরসিকে যে চিঠি দিয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, একটি আন্তর্জাতিক কল গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর জন্য মোবাইল অপারেটররা ২৭ পয়সা আর স্থানীয় কলের ক্ষেত্রে ১৮ পয়সা পায়। ভিওআইপির মাধ্যমে বিদেশি কল এনে টেলিটক তা স্থানীয় কল হিসেবে দেখিয়ে প্রাপ্য ২৭ পয়সা আয় করা থেকে তাদের বঞ্চিত করছে।
প্রমাণ হিসেবে টেলিটকের স্থানীয় কল অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার তুলনামূলক পরিসংখ্যান গ্রাফ আকারে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, গত মে মাসের তুলনায় জুনে টেলিটক থেকে গ্রামীণফোনে স্থানীয় কল বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ বাংলালিংক রবির ক্ষেত্রে এই হার যথাক্রমে ৪০ ৩৯ দশমিক শতাংশ। সময়ে টেলিটকের গ্রাহকসংখ্যায় তেমন কোনো পরিবর্তন না এলেও কল বৃদ্ধির এই হার উদ্বেগজনক।
অন্যান্য অপারেটরের ক্ষেত্রে একটি স্থানীয় কলের স্থায়িত্ব যেখানে গড়ে দেড় মিনিট, সেখানে টেলিটকের একটি স্থানীয় কলের গড় সময় প্রায় চার মিনিট। বিদেশ থাকা যাঁরা ফোন করেন তাঁরা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সাধারণত দীর্ঘ সময় কথা বলেন।
তিন বেসরকারি মোবাইল অপারেটরের আলাদা বিশ্লেষেণ বলা হয়, টেলিটকের এক সিমে গড়ে অবৈধ কল আসছে তিন থেকে ছয় হাজার মিনিট। বেসরকারি অপারেটরদের একটি সিমে এই হার গড়ে ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ মিনিট। আবার টেলিটকের অনেক সিমের ক্ষেত্রে শুধু আউটগোয়িং কলই আসছে, কোনো ইনকামিং কল নেই। সাধারণ হিসেবে কেউ যদি ১০ বার ফোন ধরেন, তাহলে তাঁর অন্তত একবার ফোন করার কথা। ভিওআইপি কল আসা বন্ধ করতে বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে টেলিটককে অনুরোধ জানানো হয়েছে বিশ্লেষণ সম্বলিত চিঠিতে।
এদিকে বিটিআরসির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, অভিযান চালিয়ে বারবার সতর্ক করেও টেলিটকের ভিওআইপি কল ঠেকানো যাচ্ছে না।সেলফ লজিকব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতি তিন ঘণ্টা পরপর সিম পরীক্ষার নিয়মও টেলিটক মানছে না।
ভিওআইপি কলের বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের বহির্যোগাযোগ বিভাগের প্রধান সৈয়দ তালাত কামাল বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত সন্দেহজনক অবৈধ কল ব্লক করি বিটিআরসিতে প্রতিবেদন জমা দিই। বিটিআরসিও একইভাবে সন্দেহজনক নম্বর বন্ধ করতে আমাদের নির্দেশনা দেয়। এই পুরো প্রক্রিয়াই স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়।তাঁর দাবি, তাঁদের নেটওয়ার্কে অবৈধ কলের সংখ্যা নেই বললেই চলে।
বিষয়ে কথা বলার জন্য গতকাল রোববার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেলিটককে কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অবৈধ ভিওআইপি ঠেকাতে বিটিআরসির পক্ষে থেকে অনেকবার টেলিটকের কার্যালয়ে আকস্মিক অভিযান চালানো হয়েছে।’”
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো। আশরাফুল ইসলাম, 06/07/2015

No comments:

Post a Comment